বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের অর্থনৈতিক প্রতিকুলতার ভাঙা পথে দিশা দেখাতে, তাদের স্বপ্ন দেখার সাহস যোগাতে আমাদের পথ চলা শুরু হয়েছিল ২০০৭ সালে। 

এক সময়ের জনপ্রিয় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট অর্কুটে আত্মপ্রকাশ করেছিল ‘এসো কিছু করি’ সময়টা ছিল ২০০৬ সাল।

সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং-কে কাজে লাগিয়ে সমাজের জন্য কিছু করতে কলকাতার যে ক’টি সংগঠন উদ্যোগী হয়েছিল, ‘এসো কিছু করি’ই তাদের মধ্যে প্রথম। বেশকিছু সমমনস্ক নাগরিক,‘এসো কিছু করি’-র সদস্যরা, খোঁজখবর নিয়ে দেখেছিলেন মাধ্যমিকের পর এরাজ্যে সবথেকে বেশি স্কুলছুটের প্রবণতা বাড়ে। 

এই বিষয়টাই নাড়া দিয়েছিল ‘এসো কিছু করি’-র সদস্যদের। তাই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং এর গণ্ডির বাইরে বেরিয়ে ময়দানে নেমে কাজ শুরু হয়। ‘এসো কিছু করি’ পশ্চিমবঙ্গ সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন আইন অনুযায়ী নিজেদের নথিভুক্ত করে, সময়টা ছিল ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাস। । 

‘এসো কিছু করি’-তে প্রধানত দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করা হয় – মেধা এবং সোপান ।  

মেধা প্রকল্পে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরে খুঁজে বার করা হয় প্রকৃত অভাবী অথচ দারুণ মেধাবী পড়ুয়াদের। এরপর তাদের পড়াশোনার সামগ্রী দেওয়ার পাশাপাশি জীবনে এগিয়ে যাওয়ার যথাযথ দিশা দেওয়া হয়। পড়ুয়াদের বাড়ি গিয়ে তাদের অবস্থা স্বচক্ষে দেখে আসে সংস্থার সদস্য-স্বেচ্ছাসেবকেরা। পাশাপাশি চলে এইসব পড়ুয়ার সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখা। পরের বছর দ্বাদশ শ্রেণীর বই দেওয়ার অনুষ্ঠানের সঙ্গে তাদের ভবিষ্যতে কী নিয়ে পড়াশুনো করা যায় সেই বিষয়েও বিস্তারিত জানানো হয়।

কেবলমাত্র অর্থ সাহায্য , বই খাতা , ক্যালকুলেটর  বা সহানুভূতি মেশানো কিছু কথা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে থাকা ছাত্রছাত্রীদের সাথে থাকা যায়, কিন্তু পাশে থাকা যায় না। ‘এসো কিছু করি’ এদের পাশেও থাকতে চায়। সেই জন্য প্রতি বছর এসো কিছু করি’র সদস্যরা প্রতিটি ছাত্রছাত্রীর বাড়ি গিয়ে দেখা করে বুঝে নিতে চায় তাদের পড়াশুনোয় অন্তরায় হয়ে ওঠা দৈনন্দিন সমস্যাগুলো । এই সফর কে আমরা বলি স্টাডি ট্যুর বা শিক্ষা সফর। 

সোপান প্রকল্পে ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে কোনও সরকারি কলেজে সুযোগ পাওয়া প্রকৃত অভাবী অথচ মেধাবী ছাত্রছাত্রীর পাশে দাঁড়ায় ‘এসো কিছু করি’।

এছারাও প্রতি বছর অভাবী অথচ মেধাবী পড়ুয়াদের শিক্ষার উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা একজন ব্যক্তিকে সম্মানিত করার মাধ্যমে প্রতি বছর ‘এসো কিছু করি’-র প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন করি।  আমাদের এই অনুষ্ঠানের নাম বরেণ্য । 

এই সংগঠনের নিরন্তর প্রয়াস এই সব ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে সারা জীবনের সম্পর্ক  গড়ে তোলা। কোভিড মহামারির সময়ও ‘এসো কিছু করি’ থেমে থাকেনি। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এই ছাত্রছাত্রীরাই এগিয়ে আসছেন সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবার লক্ষে।


আমরা নানা বয়সের মানুষ, রয়েছি নানা পেশায়, ছড়িয়ে আছি নানা প্রান্তে। তবু আমরা সমমনস্ক, সম-উদ্দেশ্যে একত্রিত। ‘এসো কিছু করি’-র পুরো কর্মকাণ্ড চলে সদস্যদের চাঁদা আর সাধারণের অনুদানের মাধ্যমে। 


‘এসো কিছু করি’র এই কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে প্রয়োজন লোকবল এবং অর্থবল। প্রয়োজন স্বেচ্ছাসেবক, প্রয়োজন শুভানুধ্যায়ীদের ব্যক্তিগত অনুদান। অনেক স্বেচ্ছাসেবক আমাদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করেন, আপনিও হাত মেলান। যারা অর্থনৈতিক প্রতিকূলতার জন্য লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে না, সেই সব দুঃস্থ মেধাবী ছাত্রছাত্রীর পাশে দাঁড়ান। আপনিও অনুদান পাঠাতে পারেন, আপনিও এগিয়ে আসুন,আমরা এক সঙ্গে কিছু করি। 

বিস্তারিত জানতে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। 


আগামী অনুষ্ঠান ও অন্যান্য বিশদ তথ্য জানতে -